সুনানে ইবনে মাজাহ [কাদিম] এর পরিচিতি:
ফিকহী তারতীবে সংকলিত এ কিতাবটি সিহাহ সিত্তার অন্তর্ভুক্ত। এ কিতাবে কোনো হাদীসের পুনরাবৃত্তি নেই। আর লেখক তার কিতাবে মোট ৪০০০ হাদীস এনেছেন। তবে তিনি এমন কিছু হাদীস এনেছেন যা অন্য সিহাহ সিত্তাহে নেই। এ কিতাবের চারটি কপি পাওয়া যায়। তবে আব্দুল হাসান আল কাত্তানের কপিই বর্তমানে প্রচলিত। এ কিতাবের অনেক ব্যাখ্যাগ্রন্থ রয়েছে। তন্মধ্যে প্রসিদ্ধ হলো, মা তামাসসু ইলাইহিল হাজাহ আলা সুনানে ইবনে মাজাহ, মিসবাহুয যুজাজাহ শহরে ইবনে মাজাহ, ইনজাহুল হাজাহ শহরে ইবনে মাজাহ প্রভৃতি।
শিক্ষার্থদের কল্যাণে আমাদের সংযোজন-
১. এই কিতাবে কম্পিউটার কম্পোজকৃত ৪টি রিসালা আধুনিক অঙ্গ সজ্জায় সংযোজন। ২. নুসখার শুরুতে ড. মুহাম্মদ ফুআদ আব্দুল বাকী এর লিখিত কিতাবের ভূমিকামূলক ১টি প্রবন্ধ কম্পিউটার কম্পোজ করে সংযোজন ৩. কিতাব, বাব ও হাদীসের নম্বর প্রদান। ৪. কম্পিউটার কম্পোজকৃত সূচিপত্র সংযোজন।
জীবনী
ইরান-এর বর্তমান কালের মানচিত্র, যেখানে কুয়াজুইন এলাকাকে দেখানো হচ্ছে, এটি ইবনে মাজাহ-এর জন্ম ও মৃত্যু স্থান
নাম ও পরিচিতি : ইমাম ইবনু মাজাহ -এর প্রকৃত নাম মুহাম্মাদ, পিতার নাম ইয়াযীদ, উপনাম আবু আব্দুল্লাহ, উপাধি الحافظ الكبير (আল-হাফিযুল কাবীর), নিসবতী নাম আর-রাবঈ, আল-কাযভীনী। তিনি ইবনু মাজাহ নামেই সমধিক পরিচিত।। তিনি ২০৯ হিজরী মোতাবেক ৮২৪ খ্রিষ্টাব্দে ইরাকের প্রসিদ্ধ শহর কাযভীনে জন্মগ্রহণ করেন। মুসলিম জাহানের তৃতীয় খলীফা ওছমান বিন আফফান -এর খেলাফতকালে এ শহরটি বিজিত হয়। এ শহরের প্রথম গভর্নর বা প্রশাসক ছিলেন বিশিষ্ট ছাহাবী বারা ইবনু আযেব । শিক্ষাজীবন : ইমাম ইবনু মাজাহ নিজ দেশেই প্রাথমিক শিক্ষা সমাপন করেন। এরপর তিনি কুরআনুল কারীম হিফয সম্পন্ন করেন। অতঃপর উচ্চশিক্ষা অর্জন এবং হাদীছ সংগ্রহের জন্য তৎকালীন মুসলিম বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ ও জনপদের যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিছদের দ্বারস্থ হয়েছেন। ইমাম ইবনু মাজাহ ২৩০ হিজরী মোতাবেক ৮৪৪ খ্রীষ্টাব্দে ২২ বছর বয়সে হাদীছ সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন শহরের মুহাদ্দিছগণের নিকটে গমন করেন। আল্লামা আবু যাহু ‘হাদীছ ওয়াল মুহাদ্দিছূন’ গ্রন্থে লিখেছেন, وارتحل لكتابة الحديث وتحصيله إلى الري، والبصرة، والكوفة وبغداد، والى الشام ومصر والحجاز، وأخذ الحديث عن كثير من شيوخ الأمصار- ‘ইমাম ইবনু মাজাহ হাদীছ লিপিবদ্ধকরণ এবং শিক্ষার্জনের জন্য রায়, বছরা, কূফা, বাগদাদ, সিরিয়া, মিসর, হেজায প্রভৃতি দেশ ও জনপদে ভ্রমণ করেন এবং বহু মনীষীর নিকট থেকে হাদীছ সংগ্রহ করেন।
মৃত্যু : ইবনু মাজাহ -এর মৃত্যু তারিখ সম্পর্কে মতভেদ রয়েছে। ইবনু কাছীর ও জামালুদ্দীন ইউসুফ আল-মিযযী তাঁর মৃত্যু তারিখ, জানাযা ও দাফনকার্য সম্পাদন সম্পর্কে বলেন, كانت وفاة ابن ماجة يَوْمَ الْإِثْنَيْنِ وَدُفِنَ يَوْمَ الثُّلَاثَاءِ لِثَمَانٍ بَقِيْنَ مِنْ رَمَضَانَ سَنَةَ ثَلَاثٍ وَسَبْعِيْنَ وَمِائَتَيْنِ عَنْ أَرْبَعٍ وَسِتِّيْنَ سَنَةً، ‘ইবনু মাজাহ ২৭৩ হিজরী ২২ রামাযান মোতাবেক ২০ নভেম্বর ৮৮৬ খ্রীষ্টাব্দে সোমবার মৃত্যুবরণ করেন। পরের দিন মঙ্গলবার তাঁকে দাফন করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। কেউ কেউ বলেন, তিনি ২৭৫ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি ২৭৩ হিজরী রামাযান মাসে মৃত্যুবরণ করেন। তবে প্রথম অভিমতটিই অধিক বিশুদ্ধ। তাঁকে গোসল করান মুহাম্মাদ ইবনে আলী কেহেরমান এবং ইবরাহীম ইবনে দীনার। জানাযায় ইমামতি করেন স্বীয় ভাই আবু বকর এবং কবরে লাশ নামান তার ভাই আবু বকর ও আবু আব্দুল্লাহ এবং স্বীয় পুত্র আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে ইয়াযীদ।
Reviews
There are no reviews yet.