বই সম্পর্কে
বিশ্ব ইতিহাসে অনেক মহামনীষী হাদীস সংকলনে ব্রতী হয়েছেন। তারা রাসূলে কারীম (সা.)-এর কথা, কাজ ও মৌন সম্মতিকে নির্ভেজাল ও ত্রুটি মুক্তভাবে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে স্বীয় রচিত পুস্তকে সন্নিবেশিত করে মুসলিম জাতিকে হাদীসে নববীর দিকে পথপ্রদর্শন করেছেন। আর এক্ষেত্রে আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী (র.) সকলের উপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছেন। আর একারণেই যুগশ্রেষ্ঠ উলামায়ে কেরাম এটাকে اصح الكتب بعد كتاب الله তথা আল্লাহর কিতাবের (আল কুরআনের) পর সবচেয়ে প্রামাণ্য ও বিশুদ্ধ গ্রন্থ অভিধায় অভিহিত করেছেন।
তিনি মানব জীবনের প্রায় প্রতিটি বিষয়কেই এই গ্রন্থে রাসূল (সা.) হাদীসের আলোক সুবিন্যস্ত করেছেন। এ গ্রন্থখানি রচনার ক্ষেত্রে তিনি স্বীয় স্মৃতি শক্তির উপর নির্ভর না করে প্রতিটি হাদীস লেখার পূর্বে দু’রাকাত সালাত আদায় করে ইলহামি ভাবে সুনিশ্চিত হয়ে হাদীসটি গ্রন্থাবদ্ধ করেছেন। আর এ কর্ম সম্পাদনে তিনি সুদীর্ঘ ১৬টি বছর অতিবাহিত করেছেন। (আল্লাহ তাঁকে জাযায়ে খায়ের দান করুন)
আমাদের প্রকাশিত এ সহীহ বুখারী শরীফে ইমাম বুখারী (র.)-এর বিশুদ্ধ হাদীসের সাথে সাথে আল্লামা আহমাদ আলী সাহারানপুরী, ইমাম আবুল হাসান সিন্ধী ও শায়েখ যাকারিয়া (র.)-এর হাদীস সংক্রান্ত হাশিয়া ও টীকা গুলোও সংযুক্ত করা হয়েছে।
বৈশিষ্ট্যাবলি
- কম্পিউটার কম্পোজ, তিন কালার ও উন্নতমানের আকর্ষণীয় কাগজে মুদ্রিত।
- হরকতবিহীন, যা দরসে বসার উপযোগী।
- দুর্বোধ্য ও সংশয়পূর্ণ শব্দাবলিতে প্রয়োজনীয় হরকত প্রদান।
- বহুল প্রচলিত হিন্দুস্তানি নুসখার অনুসরণ।
- শব্দগত ও অর্থগত ভুল সংশোধন।
- যতিচিহ্ন ও আধুনিক আরবি বানানরীতির আলোকে বিশুদ্ধ ইমলার (লেখ্যরীতি) প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ।
- ধারাবাহিকভাবে হাদীস নম্বর, কিতাব (অধ্যায়)-নম্বর এবং পর্বভিত্তিক বাব (পরিচ্ছেদ)-নম্বর প্রদান।
- প্রতিটি হাদীসের ধারাবাহিক হাদীস-নম্বরগুলো রঙ্গিনকরণ।
- যোগ্যতাসম্পন্ন, দক্ষ ও অভিজ্ঞ মুহাদ্দিসীনে কেরাম দ্বারা সম্পাদিত।
- কিতাব/অধ্যায়গুলোকে ক্যালিওগ্রাফি করে লেখা।
- কুরআনের আয়াতসমূহ হরকতযুক্তরূপে রঙ্গীনকরণ।
- হাশিয়ার নামগুলো ক্যালিওগ্রাফি করে লেখা।
- অনায়াসে খুঁজে বের করার জন্য হাশিয়াগুলো পৃথক পৃথক অনুচ্ছেদে ক্রমিক নং সহ উল্লেখ ।
- ضمير -এর مرجع সহজে খুঁজে পাওয়ার জন্য প্রতিটি ضمير ও তার مرجع -এর নিচে একটি নম্বর প্রদান।
- হাশিয়ায় অবস্থিত ভুল-ত্রুটি মূল উৎসগ্রন্থের সাথে মিলিয়ে সংশোধন।
- হাশিয়ার শেষে যে সকল উৎসগ্রন্থের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, পুরো নাম উল্লেখ করে তা সুস্পষ্টকরণ।
- কিতাবের শুরুতে উৎকৃষ্টমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ (مقدمة) ভূমিকা সংযুক্তকরণ।
- কিতাবের শেষে হাদীস ও পৃষ্ঠা নম্বর উল্লেখপূর্বক (معجم غريب الحديث) কঠিন ও জটিল শব্দাবলির ব্যাখ্যা সংযোজন।
লেখক সম্পর্কে
জগৎ বিখ্যাত আলেম প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ ইমামুল আইম্মাহ আবূ আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে ইসমাঈল বুখারী (র.) হিজরি ১৯৪ সনে বর্তমান উজবেকিস্তানের বুখারী অঞ্চলে জন্ম গ্রহণ করেন।
তাঁর পিতা ইসমাঈল ইবনে মুগীরা ইবনে জু‘ফী ছিলেন একজন খ্যাত নামা মুহাদ্দিস ও মুত্তাকী ব্যক্তিত্ব । পিতার নিকট থেকেই তার শিক্ষা জীবনের শুভ সূচনা হয়। বাবা বড় আলেম হওয়ার সুবাদে তিনি শৈশব থেকেই অনেক বড় বড় মুহাদ্দিসীনে কেরামের সান্যিধ্য লাভে ধন্য হন ফলে তার মধ্যে ইলম আহরণের স্পৃহা সৃষ্টি হয়। কিন্তু অতি অল্প বয়সে তথা শৈশবেই তার পিতার ইন্তেকাল হলে মমতাময়ী মা জননী বাবার দায়িত্ব কাধে নিয়ে ইমাম বুখারী (র.) কে তিলে তিলে গড়ে তোলেন, তাইতো আজ তিনি জগৎ বিখ্যাত ইমামুল মুহাদ্দীসীন হিসেবে বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত। হিজরি ২৫৬ সনে তিনি ইহধাম ত্যাগ করে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান।
Reviews
There are no reviews yet.