ত্বীন ফল পরিচয়
কুরআনে যে তীনের কথা উল্লেখ রয়েছে সেটির বৈজ্ঞানিক নাম Ficus carica। ফাইকাস দলভুক্ত ৮০০ প্রজাতির মধ্যে এই তীন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সবার আগে স্থান। এটি দেশীয় কাকডুমুর থেকে বড়। স্বাদে সুমিষ্ট, অত্যধিক সুস্বাদু এবং রসালো। এককথায়, স্বাদে, ঘ্রাণে এবং পুষ্টিগুণে সেরা একটি ফলের নাম তীন। তীন গাছ তিন থেকে দশ মিটার পর্যন্ত বড় হয়। ঘন এবং খসখসে পাতায় ভরপুর থাকে। উর্দুতে এর ফলকে আঞ্জির বলা হয়। পৃথিবীর অনেক দেশে এর চাষাবাদ হয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায় এটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করা হয় এবং এটি হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। আফগানিস্তান থেকে পর্তুগাল পর্যন্ত এই ফলের বাণিজ্যিক চাষ হয়ে থাকে। এর আদি নিবাস মধ্যপ্রাচ্য। সবচেয়ে বেশি চাষ হয় তুরস্কে। বৎসরে তিন লক্ষ টনের বেশি উৎপাদন হয় সেখানে। পরেই আছে মিশর, মরক্কো, আলজেরিয়া, ইরান এবং সিরিয়া।
তীনের পুষ্টিগুণ
তীনে আছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিংক, কপার, আইরন ইত্যাদি।
এতকিছু উপকারী উপাদান থাকলেও ক্যালরি এবং ফ্যাট নেই বললেই চলে। মোটা হয়ে যাওয়ার চিন্তা ঝেড়ে ফেলে পেটভর্তি খাওয়ার মতো একটি ফল তীন। বড় সাইজের একটি তীনে মাত্র ২ গ্রাম ফ্যাট থাকার কথা খাদ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন।
ডায়েটেড এবং ফিট থাকতে চাইলে তীন সবচেয়ে কার্যকর ফল। আর এন্টিঅক্সিডেন্ট-এর তীনের চেয়ে ভালো ফল আর নেই বললেই চলে।
প্রোস্টেট এবং জরায়ু ক্যান্সারের প্রতিষেধক হচ্ছে তীন। ব্লাড প্রেসার এবং স্নায়ুরোগ কমাতে দারুণ কার্যকর। মায়ের বুকে দুধ উৎপাদনে তীনের জুড়ি মেলা ভার। পাইলসে ভোগা ব্যক্তিরা অসাধারণ ঔষধ হিসাবে তীন খেতে পারেন। গরুর দুধে এলার্জি থাকলে তীন খান। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি নিয়ে আর চিন্তা করতে হবে না।
ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ, হাঁপানি রোগ, শ্বাসকষ্ট, ত্বক সমস্যা, চুলের রোগে তীন সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখে। গর্ভবতী মহিলাদের এসিডিটি নির্মূল করে তীন। কিডনি, লিভার, ইউরিনারি ব্লাডারের কার্যকারিতা বহুগুণে বৃদ্ধি করে। শরীরের দুর্বলতা দূর করে আনে সজীবতা আর অদম্য শক্তি। তীন ফলের উপকারিতা লেখতে চাইলে শেষ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।
আল্লাহর রাসুল (সা.) তীন ফল অনুসারীদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়ার সময় বলতেন, ‘এটি খাও, কারণ এতে অনেক রোগের ঔষধ রয়েছে।
Reviews
There are no reviews yet.